বড় সৌভাগ্য হয়েছিলো
বৃষ্টিমুখর সেই সন্ধ্যায়।
ভেজা বুকে সেদিন
সবুজ সুগন্ধ নিয়ে বলেছিলে-
"অমল, বাইরে ভিজছো কেন?
ছাতার মধ্যে আসতে পারো না? "
ছাতার মধ্যে আসতে গিয়ে
হাতটা আমার
তোমার
বুকে ঠেকেছিলো।
সেদিন
সে মুহূর্তেই জেনেছিলাম-
রমণী বক্ষে জাদু আছে।
তার স্পর্শে, কৈশোর যৌবন হয়
অশীতিপর বৃদ্ধ বলিষ্ঠ অশ্ব হয়
মুমূর্ষ পুরুষ হুঙ্কাররত সিংহ হয়!
ইচ্ছে করেছিলো
বুকের সমুদ্রে তোমার
তখুনি সাঁতার কাটি আমি!
তাই
তোমার পানে চেয়ে
অপেক্ষায় ছিলাম আমি।
পুরুষের যাতনা এই যে-
নারী জানে না,
স্পর্শে তার স্ফুলিঙ্গ আছে।
যে স্ফুলিঙ্গ
সবুজ স্যাঁতসেঁতে অরণ্যেও
দাবাগ্নির আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
পৃথিবীর কোন নারী কি জানে
কতটা নিঃশব্দ যন্ত্রণা
নিত্যদিন তারা পুরুষ বুকে আঁকে?
উচ্ছৃঙ্খল কত স্বপ্ন
প্রতিরাত তারা পুরুষ চোখে আঁকে?
যে নারী পূর্বজন্মে
পুরুষ হওয়ার যন্ত্রণা বুঝেছে,
সে কি কখনো
আর পুরুষ হতে চাইবে?
পুরুষ সবই ত্যাগ করতে পারে-
ধন মান খ্যাতি সম্পদ।
সব।
পারে না ত্যাগ করতে,
কেবল
তার পৌরুষত্বের তৃষ্ণাকে!
হে মালবিকা
কখনো কি ভেবে দেখেছো তুমি
সেদিন
কতটা আগুন তুমি জ্বালিয়েছিলে বুকে?
কতটা নিষিদ্ধ স্বপ্ন এঁকেছিলে চোখে?
অথচ
তুমি দুঃখের মতো প্রিয়
আগুনের মতো প্রিয়
সুনামির মতো প্রিয়!
বারবার ধ্বংস হয়েও
আরও বেশি ধ্বংস হতে চাই আমি।
বারবার ছাই হয়েও
আরও বেশি ছাই হতে চাই আমি।
দিন দিন বছর বছর
এতো তো যন্ত্রণা আঁকো বুকে!
কই, তবুও
ভুলতে তো তোমাকে পারি না!
বলতে তো কখনো পারি না-
থাক থাক!
এতো নিষ্ঠুর যে নারী
তার তরে কেন তবে জ্বলে পুড়ে মরা?
এক ইঞ্চি দূরে যেতে চাইলে
এক আলোকবর্ষ কাছে এসে পড়ি।
এই মুহূর্ত ভুলতে চাইলে
এক যুগ স্মৃতি রোমন্থন করি।
কই,
একদিনও তো বুকে হাত দিয়ে বলো নি-
ব্যথা! কোথায় ব্যথা অমল?
এসো, একটু হাত বুলিয়ে দিই আমি!
বলো নি। একবারও বলো নি।
বলতে চেয়েও বলো নি
ভুল করেও বলো নি।
কত নারীর
কত কত ভুল হয়।
অথচ তোমার ভুল হয় না
আমার মালবিকার ভুল হয় না।
তুমিই বলো
একবারও কি তোমার,
ভুল করেও ভুল হয় না?
ওহে নারী
কেন তবে ডেকেছিলে তুমি?
কেন এঁকেছিলে স্বপ্ন চোখে?
কেন তবে জ্বালিয়েছিলে আগুন
আমার এ দাহ্য বুকে?
© অরুণ মাজী
Painting: Amit Bhar
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem