ভালোই করেছো চলে গেছো।
কে আর দিগভ্রষ্ট উল্কার সাথে
আকাশ থেকে খসে পড়তে চায় বলো?
তার চেয়ে বরং
ভালোই করেছো চলে গেছো।
ঘরের কোণে
তোমার জুতোজোড়া পড়েছিলো।
চিন্তা করো না
ধুলো মুছে, ওগুলো গুছিয়ে রেখেছি।
ঊহঃ কি সাংঘাতিক ভুলো মন তোমার!
মাথার ফুল জোড়া এতো প্রিয় তোমার
সেটাও দেখি- বিছানার নীচে পড়ে!
ভেবো না, সেগুলোও
সাবান দিয়ে ধুয়ে বাক্সে রেখেছি।
কদিন যেন হলো তুমি চলে গেছো?
ভালোই করেছো চলে গেছো।
কে আর
উন্মাদ সাথে ঘর করতে চায় বলো?
তার চেয়ে বরং
ভালোই করেছো চলে গেছো।
ওষুধটা সকালে খেয়েছো?
সকালে কেউ চা বানিয়ে দেয়?
ওষুধটা তাহলে খাও কি করে?
অবহেলা করে
আবার একটা কেলেঙ্কারী করো না বাপু!
ঠান্ডাও তো আজকাল বাড়ছে!
আমি নেই,
রাতে বিরেতে, হাঁপানিটা যদি বেড়ে উঠে!
ধুস! খামোকা উদ্বেগ আমার।
নিজের যত্ন
তুমি নিজেই নিতে পারো।
তা ছাড়া কলকাতার সেই......
মুখার্জী... না কি যেন নাম তার....
কে আর
হারানো পথিকের সাথী হতে চায় বলো?
তার চেয়ে বরং
ভালোই করেছো চলে গেছো।
জানো, বাথরুমে এখনও
তোমার চুলের সুগন্ধ পাই!
অথচ এক মাস হলো
তুমি চলে গেছো!
সুগন্ধ এতদিন লেগে থাকে কখনো?
কে জানে?
আমি কিন্তু বাথরুমে ঢুকলে
তোমারই সুবাস পাই।
এই ধরো গতকালের সন্ধ্যের ঘটনা-
টেবিলে পড়ছি,
হটাৎ-ই রান্নাঘরে
কার যেন কাঁকনের আওয়াজ!
মনের অজান্তেই জিজ্ঞেস করে ফেললাম-
কে? মালবিকা!
এতো তাড়াতাড়ি রান্না কেন?
পরক্ষণেই মনে হলো
ধুস! তুমি তো কবেই চলে গেছো!
অবশ্য ভালোই করেছো চলে গেছো।
ভালোবাসা দিয়ে কি আর
ভালোবাসা কেনা যায়?
আমার কি আর
অত টাকাকড়ি গয়নাগাটি আছে?
প্রতিদিন
মাছও তোমাকে খাওয়াতে পারি না!
দুঃখ হয়। জানো, বড় দুঃখ হয়!
দুর্বল গরীব মানুষগুলোকে বুঝি
কেউ ভালোবাসে না।
মানুষও না। নারীও না। ঈশ্বরও না।
সবাই তো
আলো ঝলমল উৎসবের পথে যাত্রা করে।
কে আর স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্যের তপস্যা করে বলো?
তবুও কি জানো মালবিকা?
ভেবেছিলাম-
তুমিই আমার শান্ত স্নিগ্ধ চন্দ্রমা।
সারাজীবন আমি
কেবল তোমরাই সাধনা করবো!
কিন্তু চাইলেই কি সব পাওয়া যায়?
অদৃষ্টও তো আছে!
সে তার কসরৎ দেখাবে না?
যাক গে,
ভালোই করেছো চলে গেছো।
কে আর
ক্যাবলা অমলের সাথে ঘর করতে চায় বলো?
তার চেয়ে বরং
ভালোই করেছো ভুলে গেছো।
ভুলেই থেকো।
সুখী থেকো। ভালো থেকো।
© অরুণ মাজী
Painting: Eugene De Blaas
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem