১. মহানবী (দ :)কিভাবে ‘মধ্যাকর্ষণ শক্তি'অতিক্রম করলেন?
২. মহাশূন্যে বায়ুহীন, প্লাজমা ইত্যাদির যে সব উত্তপ্ত স্তর রয়েছে, রক্ত মাংসে গড়া জড় পদার্থের মানুষের পক্ষে তা অতিক্রম করা কিভাবে সম্ভব?
৩. তিনি কিভাবে অতি অল্প সময়ে এত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আবার ফিরে এলেন?
এই প্রশ্নগুলো নতুন নয় রাসূল(দ :)স্বয়ং এর উত্তর দিয়েছিলেন তাৎক্ষণিক এবং আলহামদুলিল্লাহ আজ এর উত্তর দিচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান।
পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্যে অবস্থানকারী সব বস্তুকেই সবসময় সমভাবে আকর্ষণ করতে পারে না তা আজ পরীক্ষিত সত্য। প্রত্যেক গ্রহেরই নিজস্ব আকর্ষণী শক্তি রয়েছে। সূর্য ও পৃথিবী পরস্পর পরস্পরকে টেনে রেখেছে। এ টানের ফলে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে এমন একটি স্থান রয়েছে যেখানে কোন আকর্ষণ-বিকর্ষণ নেই, একে বলা হয় ‘নিষ্ক্রীয় এলাকা'(Neutral Zone) । কাজেই পৃথিবীর কোন বস্তু যদি এই ‘নিষ্ক্রীয় এলাকা'র সীমানায় পৌঁছতে পারে, তবে তার আর পৃথিবীতে ফেরার কোন সম্ভাবনা নেই।
গতিবিজ্ঞানের(Dynamics)মতে, পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুকে ঘন্টায়২৫হাজার মাইল(যাকে আমরামুক্তিবেগ বা Escape Velocity হিসেবে জানি)ঊর্ধ্বালোকে ছুড়ে দেয়া হলে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না।আধুনিক জ্যোতির্বিদরা বলেন, "পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুর দূরত্ব যতই বাড়ে, ততই তার ওজন কমে, পৃথিবীর এক পাউন্ড ওজনের কোন বস্তু ১২ হাজার মাইল ঊর্ধ্বে মাত্র এক আউন্স হয়ে যায়। এ থেকে বলা যায়, পৃথিবী থেকে যে যত ঊর্ধ্বে গমন করবে, তার ততই অগ্রগতি হবে।"- The Exploration of Space, P-15
এবার দৃষ্টি আলোকপাত করি মেরাজের দিকে-রাসূল (দ :)মেরাজকালীন দুটি যানে আরোহণ করেন- মসজিদুল হারাম থেকে সিদরাতুলমুনতাহা (শেষ সীমানা) পর্যন্ত'বোরাক' এবং সিদরাতুলমুনতাহা থেকে রাব্বুল আলামীনের সান্নিধ্য পর্যন্ত রফরফ। বোরাক শব্দটি বারকুন থেকে উদ্গত, যার অর্থ- বিজলি এবং রফরফ অর্থ চলমান সিঁড়ি বা নরম তুলতুলে বিছানা, হাদীসে পাকে যার গতি আলোর চেয়েও বেশি উল্লেখ করা হয়েছে।আমরা জানি আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল। শাব্দিক অর্থ বিবেচনায় বোরাকের গতি অন্তত আলোর গতির সমান ছিল। হয়তো আরও বেশিই ছিল।হজরত মুহাম্মদ (সা.)বোরাকের দ্রুতগতির বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ' বোরাক নিজ দৃষ্টি সীমার শেষ প্রান্তে প্রতিটি কদম ফেলে।'ইট-কংক্রিটে শহরে মানুষের দৃষ্টি বেশিদূর যায় না ঠিকই, কিন্তু দৃষ্টির সামনে কোনো অন্তরায় না থাকলে দিগন্ত দেখা যায়। আমরা পৃথিবী থেকে আকাশও তো দেখতে পাই। সেটা প্রথম আকাশ, সপ্তম আকাশের আগে কিছু না থাকলে পৃথিবী থেকেই হয়তো সপ্তম আকাশও দেখা সম্ভব হতো। এভাবে বিশ্লেষণ করলেই বুঝে আসে বোরাক কত দ্রুতগতির বাহন ছিল। বোরাকের গতির প্রকৃত জ্ঞান এখনও হয়তো মানুষের অর্জনই হয়নি।উপরন্তু রফরফের গতি ছিল বোরাকের চেয়ে কয়েকশত গুণ বেশি।
আধুনিক পদার্থবিদ্যার মতে- কোন বস্তু যখন আলোর গতিতে চলে তখন তা সময় অতিক্রম করতে পারে। এবং গতি যদি আলোরবেগ ছাড়িয়ে যায় তা সময়ের ঋণাত্মক দিকে চলে যায়। কাজেই রাসূল (দ :)সপ্ত নভোমণ্ডল, জান্নাত, জাহান্নাম সব দর্শন করে এসেও ওযুর পানি প্রবাহিত অবস্থায় কিংবা দরজার শিকল নড়া অবস্থায় পাওয়া অদ্ভুত কিছু নয়।
আলবার্ট আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি অফ টাইম তথা সময়ের আপেক্ষিকতার থিওরিটিও মিরাজের ঘটনা বুঝতে সহায়ক হয়। দ্রুতগতির একজন রকেট আরোহীর সময়জ্ঞান আর একজন স্থিতিশীল পৃথিবীবাসীর সময়জ্ঞান এক নয়। রকেট আরোহীর দুইশ বছর পৃথিবীর দু বছরের সমানও হতে পারে। পবিত্র কোরআনেও এমন একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। হজরত উযাইর (আ.) কে আল্লাহতায়ালা একশ' বছর মৃত অবস্থায় রাখলেন। তারপর তাকে জীবিত করে প্রশ্ন করলেন- ‘বলত, কতদিন এভাবে ছিলে? লোকটি বলল একদিন বা একদিনের কিছু সময় আমি এভাবে ছিলাম। আল্লাহ বললেন, না। তুমি বরং একশ' বছর এভাবে ছিলে। তোমার খাবার ও পানিয়ের দিকে তাকিয়ে দেখ সেগুলো পচে যায়নি। আর দেখ নিজের গাধাটির দিকে।(সূরা বাকারা: ২৫৯) । এ আয়াতে দেখা যাচ্ছে, হজরত উযাইর (আ.)যে সময়টাকে একদিন বা তারও কম ভাবছেন বাস্তবে তা একশ' বছর। একদিকে তার খাবার পচে যায়নি তাতে সময়টা সামান্যই মনে হচ্ছে অপরদিকে তার মৃত গাধার গলে-পচে যাওয়া বিচূর্ণ হাড্ডি প্রমাণ করছে বহুকাল এরই মধ্যে চলে গেছে। এটাই রিলিটিভিটি অফ টাইম বা সময়ের আপেক্ষিকতা।
মার্কিন নভোযান ডিসকভারির মহাশূন্যচারিরা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসায় প্রমাণিত হয়েছে নভোভ্রমণ বাস্তবেই সম্ভব। কিন্তু হজরত মুহাম্মদ (সা.)যখন মিরাজে গিয়েছিলেন তখন বিষয়টা কল্পনাতীত ছিল। মিরাজের ঘটনা মহাকাশ বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের বিশাল অবদান রেখেছে এবং রেখে যাচ্ছে।
(সূত্র: ইন্টারনেট/কন্সেপ্ট: শায়খুল হাদীস ড.আল্লামা তাহিরুল কাদ্বেরী'র Modern Science & Miraj লেকচার/লেখক: এস.এম.ইকরাম হোসাইন))
PIC free Space photo Google SEARCH
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem