মুখপোড়া হনুমান ও তার আন্ডারপ্যান্ট (On Human Evolution) Poem by Arun Maji

মুখপোড়া হনুমান ও তার আন্ডারপ্যান্ট (On Human Evolution)

Rating: 5.0

ইচ্ছে হয়- ইয়া লম্বা একটা লেজ বানিয়ে, মুখপোড়া হনুমান সেজে, তোমাদের বাড়ির খড়ের চালে বসি। সেখানে কলা চপা চিবোতে চিবোতে, দাঁত বের করে তোমাদেরকে খ্যাঁক খ্যাঁক করে ভেংচি কাটি! ইচ্ছে হয় তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করি- "আমার মধ্যে তোমাকে দেখতে পাচ্ছো"?

দাঁত বের করা খ্যাঁক খেঁকে হনুমান হয়ে, হনুমান সাজতে লজ্জা নেই আমার। বরং তাতে আমার একটু বেশিই গর্ব হয়। নিদেন পক্ষে- পোড়ামুখ আমার ঘোমটার আড়ালে ঢাকি না। ঢাকবো কেন? আমাদের পূর্বপুরুষকে, আমার একটু সন্মান জানাতে ইচ্ছে হয় না?

মুখপোড়া হনুমান হয়ে, টিকিধারী পন্ডিত সাজতে অরুণ মাজীর ঘোরতর আপত্তি। বাথরুমে আয়নার সামনে সে, হনুমান হওয়ার অভ্যাস করে। একদিন তোমরা হয়তো, মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার জন্য মহাকাশযানে চড়বে। অরুণ মাজী তখন- মুখপোড়া হনুমান সেজে, তোমাদের আন্ডারপ্যান্টে সুড়সুড়ি দেবে। এখন প্রশ্ন হলো- অরুণ মাজী তা করতে চায় কেন?

"শিম্পাঞ্জী থেকে মানুষ"- এ ঘটনা বিবর্তন অথবা অবনমন? ডারউইন বুড়ো, দাড়ি চুলকে চুলকে একে বিবর্তন বলতেই পারেন। তা বলে কি আমাকে তা মেনে নিতে হবে? আমি চামচিকে বলে, বুদ্ধির গোড়ায়- আমার কি একটু ধোঁয়া দিতে ইচ্ছে করে না?

মানুষ ভেবেছিলো- ভালো ভালো খাওয়ার আর ওষুধ আবিষ্কার করে, সে শক্তিমান পুরুষ হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে কি হয়েছে? আমাদের ঠাকুরদারা, আমাদের ঠাম্মাকে বিছানায় যতটা খুশি করতে পারতেন, আজকাল আমরা তা পারি না। বিজ্ঞানীরা মেপে দেখেছেন- পঞ্চাশ বছর আগে, মানুষের যে গড় "টেস্টোস্টেরন" লেভেল ছিলো, আজকের দিনে- আমাদের তা নেই। তার অর্থ কি? শক্তিমান পুরুষ হতে গিয়ে, আমরা আরো বেশি নপুংসক হয়ে গেছি।

কখনো প্রশ্ন করেছো নিজেকে, আমরা- জীবনের আয়ু বাড়িয়েছি? অথবা আমাদের যন্ত্রণার আয়ু বাড়িয়েছি? আমরা কয়েক বছর বেশি বাঁচছি ঠিকই, কিন্তু তা কেমন বেঁচে থাকা? নিঃসঙ্গ পেন্তীর মা- বুড়ো বয়সে, গেঁটে বাতের যন্ত্রণা আর হাঁফানির শ্বাসকষ্ট সহ্য করতে পারে না। তুলসী তলায় মাথা কুড়ে মরে সে- "হে ভগবান, এতো লোকের মরণ হয়, আমার কেন হয় না"? দুদিন আগে নগেন মাস্টার, বৃদ্ধাশ্রমের বাথরুমে গলায় দড়ি দিয়ে মরেছে। তিন্নির মেজো বৌদি, দুপুর বেলা শুয়ে শুয়ে নীরবে কাঁদে। সংসার আর জীবনকে, গাধার বোঝা মনে হয় তার।

বিদেশে ছবিটা একটু অন্যরকম। বুড়ো লোকেরা এখানে খাওয়ার বেশি খায় না। গাদা গাদা ট্যাবলেট খায়। আমার এক রোগী আছে- প্রতিদিন সে- আটত্রিশটা ট্যাবলেট খায়। সেই ভদ্রলোক, একদিন আমাকে কি বলেছিলো জানো? "জানো ডাক্তার, মরতে- ইচ্ছে হয় কিন্তু সাহস হয় না।" নিউইয়র্ক সিডনি মেলবোর্ন ইত্যাদি শহরের রাস্তায়- যে কোন দশটা লোককে তুমি কামড়ে দাও, দেখবে- তাদের চার বা পাঁচ জনের রক্তে, আন্টি ডিপ্রেস্যান্টের গন্ধ!

একজন মানুষ হয়ে, তুমি হয়তো আরেক মানুষকে কামড়াবে না। কিন্তু মানুষ হয়ে মানুষকে কামড়ানোর, কোন লোকের অভাব নেই। কারও বুক- শূন্যতায় একটু ফঙ ফঙ করছে, তো সে কি করলো? অটোমেটিক মেশিন গান হাতে, রাস্তায় গিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে, একশো মানুষকে খামোকা মেরে দিলো!

শিম্পাঞ্জী মানুষ হয়েছে? অথবা মানুষ শিম্পাঞ্জী হচ্ছে? মুখপোড়া হনুমান সেজে, আমি যদি খ্যাঁক খেঁকে গলায় তোমাদেরকে একটু ভেংচি কাটি, তাহলেই যত দোষ? কেন? অরুণ মাজীর আন্ডার প্যান্টের রঙ কি তোমাদের পছন্দ হয় না?

© অরুণ মাজী

মুখপোড়া হনুমান ও তার আন্ডারপ্যান্ট (On Human Evolution)
Friday, February 2, 2018
Topic(s) of this poem: bangla,character,cruelty,evolution,human,integrity
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success