এক উন্মাদ ও তার আন্ডারপ্যান্টের কাঁকড়াবিছে (On Love) Poem by Arun Maji

এক উন্মাদ ও তার আন্ডারপ্যান্টের কাঁকড়াবিছে (On Love)

মানুষ জানে না বলেই, তা যে বাস্তবে নেই- তা কিন্তু ঠিক কথা নয়। মানুষ অনেক কিছু জানে না, তবুও তাদের অস্তিত্ব কিন্তু ভীষণ ভাবে বিদ্যমান। মানুষ প্রবাল দ্বীপকে আগে একধরণের জড় পাহাড় মনে করতো। এখন সে বোঝে- প্রবালদ্বীপে, জড়ের সঙ্গে জীবও বর্তমান। গাছও যে মানুষের মতো এক ধরণের জীব, মানুষ সে ব্যাপারে সন্দিগ্ধ ছিলো। এখন মানুষ জানে- গাছও বেশ উন্নত জীব।

মানুষ কতটুকুই বা জানে? মানুষ তার মস্তিষ্কের গোলকধাঁধাঁর ক্ষুদ্রাংশও এখনো বুঝে উঠতে পারে নি। MIND কি? তা ব্যাখ্যা করতে বিজ্ঞানীরা তাদের আন্ডারপ্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে।

মানুষ ঠিক কতটা বড়? মানুষের শক্তি ঠিক কতটা? বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের তুলনায় আমাদের MILKY WAY গ্যালাক্সি একটা ধূলিকণাও নয়। আমাদের MILKY WAY গ্যালাক্সির তুলনায় সৌরজগৎ একটা ধূলিকণাও নয়। সৌরজগতের ভিতর যে শূন্যস্থানআছে তা ধরলে,সৌরজগতের তুলনায় আমাদের পৃথিবীও একটা ধূলিকণা নয়। পৃথিবীর তুলনায় একজন মানুষ একটা ধূলিকণাও নয়। তাহলে বুঝতেই পারছো-বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের তুলনায় মানুষ একটা ধূলিকণারও ধূলিকণা নয়। তাই মানুষের বুদ্ধি ও শক্তি দুইই খুব নগন্য।

মানুষ ভীষণই ক্ষুদ্র, তবুও মানুষ কিন্তু বসে নেই। ইঁদুর বিচি সাইজের মস্তিস্ক নিয়েও, মানুষ কিন্তু হুঁকো খেতে চাঁদে পৌঁছে যাচ্ছে। মানুষ মঙ্গল গ্রহে ক্যাসিনো (CASINO)বানানোর চেষ্টা করছে। মহাশূন্যে (SPACE)মানুষ সোনাগাছির মতো সুন্দর এক উদ্যান বানানোর চেষ্টা করছে।

মানুষের চিন্তা ভাবনার অদ্ভুত এই বৈচিত্র্য দেখেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- "ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সত্যিই ১৬০০ নারীর সাথে রতিক্রীড়া করতেন"। ভগবান ১৬০০ নারীকে সামলাতে পারেন বলেই, মানুষ ১৬ জন নারীকে সামলাতে পারে।মানুষের এই "দুষ্টু মিষ্টি" গুনের জন্যই, মানুষকে আমি পূজা করি, শ্রদ্ধা করি। মানুষ যদি কেবল সাধু হতো, তাহলে আমি ১৩৩৭ বছর আগে আত্মহত্যা করতাম। সাধু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, মানুষ চোর ছ্যাঁচ্চোর বেইমান ইতর- তাই মানুষকে আমার এতো বেশি ভালো লাগে।

তোমরা জানো, আমি কেবল আলোতে বিশ্বাসী নই। আমি অন্ধকারেও বিশ্বাসী। অন্ধকার আছে বলেই আলো সুন্দর করে ফুটে। দুঃখ আছে বলেই, সুখকে আমরা সুখ বলে বুঝতে পারি। এজন্যই দুঃখকে আমার এতো আপন মনে হয়। শ্রীমতি দুঃখ রানীর রাঙা ঠোঁটে চুমু দিতে, বড় ভালো লাগে আমার। তার নরম বুকে মাথা রেখে, কবিতা লিখতে বড় আনন্দ আমার। দুঃখ রানীর চুলের ভেতর উকুন গুনতে গুনতে, হুঁকো টানতে বড় আনন্দ আমার!

অরুণ মাজী ইদানীং একটু বেশি উন্মাদ হয়ে গেছে। হারামজাদা আজকাল বেশি বেশি ধান ভাঙতে শিবের গীত গায়। আসল কথা ছেড়ে, উন্মাদটা কেবল হুঁকো টানার গল্প করে।

যা বলছিলাম- মানুষ পূজ্য। খুবই পূজ্য। তাই বলে কি, মানুষের আন্ডারপ্যান্টে কাঁকড়াবিছে ছেড়ে, আমার একটু তামাশা দেখতে ইচ্ছে করে না? করে। আলবৎ করে। হাজারবার করে। নিজের আন্ডারপ্যান্টে, নিজেই আমি কাঁকড়াবিছে ঢুকিয়ে দিই। তারপর সেটা যখন আমাকে কুটুস কুটুস কাটে, আমি তখন বৃন্দাবনীর সেই বিখ্যাত গান গাই-

আহাঃ কি আনন্দ জীবনে!
পান খেয়ে মোর দাঁত গেলো
তবু হাসি ধরে না বদনে।

ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো তাহলে? মানুষ ক্ষুদ্র। মানুষ চরিত্রহীন। মানুষ বিকলাঙ্গ। মানুষ চোর ছ্যাঁচ্চোর বেইমান ইতর। তবুও মানুষ কিন্তু সাধু হয়। অনেক সময় সে দেবতার উচ্চতায়ও উপবিষ্ট হয়। অনেক অসাধ্য আর দুঃসাধ্য কাজ সাধন করে সে। আলোকে ভালোবাসতে গেলে যেমন অন্ধকারকে শ্রদ্ধা করতে হয়। ঠিক তেমনি- মহৎ মানুষকে ভালোবাসতে গেলেও, দুষ্টু ইতর মানুষকে শ্রদ্ধা করতে হয়।

ভালো মন্দ নিয়ে এই পৃথিবী। মন্দকে মন্দ বলে এতো ঘৃণা কেন? মন্দের আড়ালেও যে অফুরন্ত প্রেম ভালোবাসা আছে, তা তুমি দেখতে পাও কি? চণ্ডালও একদিন মহাঋষি বাল্মীকি হয়ে যায়। রক্ত পিপাসু রাজা অশোক, সেও একদিন ধার্মিক হয়ে যায়। ছারপোকা হৃদয়ের অরুণ মাজী, সেও কখনো কখনো শান্তির কবুতর হয়ে যায়।

কে বলতে পারে গো কে বলতে পারে? মানুষকে কখনো বিচার করো না। ঠকবে। পাপ করবে। মানুষকে কেবল ভালোবাসো। শ্রদ্ধা করো। বিচার করে মানুষকে পরিত্যাগ করলে, এই পৃথিবী আরো নিষ্ঠুর আর নোংরা হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষকে ভালোবাসলে, এই পৃথিবীর সূর্য আরো রাঙা হবে, নদী আরও সংগীত মুখর হবে, আকাশ আরো বড় উদার হবে। আর মানুষ? মানুষও ফুলের মতো সুন্দর সুগন্ধী হবে। জয় ভগবানের জয়। জয় মানুষের জয়।

© অরুণ মাজী

এক উন্মাদ ও তার আন্ডারপ্যান্টের কাঁকড়াবিছে (On Love)
Tuesday, March 20, 2018
Topic(s) of this poem: bangla,human,love,peace
COMMENTS OF THE POEM
Shakil Ahmed 20 March 2018

Simplly woderful, your language is easy but theme is gteat, we feel happy because sorrow exists in other side, nice idea, keep it up, thanks for sharing.

0 0 Reply
Shakil Ahmed 20 March 2018

Simplly woderful, your language is easy but theme is gteat, we feel happy because sorrow exists in other side, nice idea, thanks for sharing.

0 0 Reply
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success