প্রেম একটা স্রোত, বিবাহ একটা বাঁধ। কাজেই বিবাহে, প্রেমের মৃত্যু ঘটবেই ঘটবে।
প্রেমিক আর সংসারী- দুটো এক সঙ্গে হওয়া কঠিন। যেমন সংসারী হয়ে ঈশ্বর সাধনা কঠিন। প্রেম যেহেতু ঈশ্বরের আর এক নিরাকার রূপ, তাই ঈশ্বরের সব গুনই- প্রেমে বর্তমান।
অদ্ভুত এই সমাজের চাওয়া! সমাজ চাই- মানুষ, বেশী করে ঈশ্বর সাধনা করুক। সমাজ এও চাই- যে মানুষ ভালো করে সংসারী হউক। সমাজ চাই- মানুষ আরও বড় প্রেমিক হউক। সমাজ এও চাই- যে মানুষ বিয়ে করে, ভালো সংসারী হউক। তুমি আমি- সবাই এই অন্তর্দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত।
আমরাও সমাজের মগজ ধোলাইয়ে শিখেছি, যে- বিবাহ, জীবনে অতি আবশ্যক এক কর্ম। কিন্তু সত্যিই কি তাই? সভ্যতার আদিলগ্নে বিবাহ বলে কোন কিছু তো ছিলো না! আজও অনেক উপজাতির মধ্যে বিবাহ বলে কিছু নেই। বিবাহ বা সংসার ধর্ম- মানুষকে আরও বেশী হীন আর হিংস্র করেছে।
ঈশ্বরের অসীম অস্তিত্বকে, মানুষ সসীম দৈর্ঘ্যের ধর্মশাস্ত্র দিয়ে বাঁধার চেষ্টা করেছে। মানুষ তাতে- ঈশ্বরকে অবমাননা করেছে, মানুষের ঈশ্বর চিন্তাকে সংকীর্ণ করেছে। সেই সংকীর্ণতাই আরও বেশী ডানা গজিয়ে, মানুষে মানুষে বিভেদ গড়ে; মানুষকে- নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে ঠেলে দিয়েছে।
সমাজে, ভালো মানুষের সংজ্ঞা বেশ অদ্ভুত ধরনের! সমাজের (অনেক) বস্তা পচা সংস্কার যে মেনে চলে, সমাজ তাকে ভালো বলে। অন্যদিকে প্রেমের কারনে যে ভিক্ষা বৃত্তি করে, সমাজ তাকে- ঘৃণা করে, বিদ্রূপ করে।
পৃথিবী যে ক্রমশ প্রেমহীন হয়ে যাচ্ছে, তার কারন মানুষের এই সংসার ধর্ম। মানুষ যদি আবার বিবাগী, ভিখারি হতে শেখে- তাহলে পৃথিবী, তার হারানো প্রেম ফিরে পাবে।
বিবাগী হও হে মানুষ, বিবাগী হও। যারা- হীরের নেকলেস, আর প্রেমের উচ্ছ্বাস- দুটোই একইপুরুষের (বা একই নারীর মধ্যে) কাছ থেকে চায়- তারা সোনার পাথর বাটিকে বাস্তবে সম্ভব বলে ভাবে!
যে প্রেমিক- তার প্রেমকে, পরিণয়ে পূর্ণতা দেওয়ার স্বপ্ন দেখে, সে প্রেমিক (বা প্রেমিকা) - জীবনে যন্ত্রণা পাবেই, পাবে।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem