এমন কেউ পুরুষ কি আছে-
যাকে, তার বৌ
মুখ ঝাপটা দিয়ে বলে না-
'কি কুক্ষণে যে
তোমার মতো অকর্মণ্যকে
বিয়ে করতে গেলাম! '
অথবা
'মুরোদে তোমার
কিই বা আর আছে? '
যে মহাপুরুষটা
এই মুহূর্তে, নোবেল প্রাইজ হাতে
সুউচ্চ আসনে দাঁড়িয়ে, আকর্ণ বিজয়ীর হাসি হাসছে;
গতরাতে,
সেও তার বৌয়ের
মিষ্টি মিষ্টি মুখের, তেতো তেতো সুক্তো দিয়ে
রাতের আহার সেরেছে।
নারী জাতি
পর-পুরুষের প্রশংসায় যতটা উদার
তার ভগ্নাংশও, সে যদি তার স্বামীর প্রতি হতো;
তাহলে কোন পুরুষই
আঁধারে চোখের জল ফেলতো না
ডুকরে ডুকরে কেঁদে, ঈশ্বরকে নালিশ করতো না
বা অকালে আত্মহত্যা করতো না!
অথচ
পুরুষও মানুষ।
তারও মন আছে, রক্ত মাংস আছে,
ধকধক করতে থাকা
ধুকপুকে একটা হৃৎপিণ্ড আছে।
তারও চোখে
একটু স্বপ্ন আছে, আকাঙ্খা আছে,
শিশুর মতো একটু আকুতি আছে-
'হে ঈশ্বর
কেউ, কেউ তো একদিন
নরম নরম হাতে
গরম গরম বুক
ঠেসে ঠেসে, জিজ্ঞেস করবে-
'কষ্ট পাচ্ছো? কোথায় গো?
এসো, একটু হাত বুলিয়ে দিই সেথায়! '
নাঃ কেউ নেই, কিছুই নেই।
হতভাগ্য পুরুষ ললাটে
নারী প্রেমের স্পর্শ নেই
ভাগ্য দেবতার করুণা নেই
স্বপ্ন কাননে কুঁড়ি নেই।
হয়তো বা আছে,
জীবন নেই তো মরণ আছে।
দুঃখ যন্ত্রণা হাহাকার
জীবন যৌবন প্রেমের, ছদ্মবেশে আছে।
যা কাছে আছে
তা থেকেও নেই।
যা দূরে আছে
তা স্পর্শে নেই, দৃশ্যে নেই।
মানুষ আর ঈশ্বর
উভয়েই ভুলে যায়-
পুরুষও এক, রক্ত মাংসের মানুষ!
তারও ধকধক করতে থাকা
ধুকপুকে একটা হৃৎপিণ্ড আছে।
তারও চোখে
একটু স্বপ্ন আছে, আকাঙ্খা আছে,
শিশুর মতো একটু আকুতি আছে।
সহস্র বছর আগে,
নির্লিপ্ত ঈশ্বরের চৈতন্য শ্রীমান চিত্রগুপ্ত-
ঈশ্বরের অগোচরে,
একদিন অরুণ মাজী নামে
কোন এক উন্মাদ কবিকে বলেছিলো-
'যে জীব পূর্বজন্মে অনেক অনেক পাপ করে
সেই কেবল, পর জন্মে পুরুষ রূপে আসে! '
((কেউ নিঃশব্দে কাঁদে, কেউ গলা ছেড়ে কাঁদে। সকলেই কাঁদে। পুরুষ নারী, যদি একে অপরের যন্ত্রণা না বুঝে- জীবন, যৌবন, সংসার- শ্মশান হয়ে যায়।)
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem