শ্বাসে নিলে শান্তি
প্রশ্বাসে মিলে প্রশান্তি।
শ্বাসে নিলে বিষ
তুমি জ্বলবে অহর্নিশ।
তুমি যা খাও, যা পান করো, যা চিন্তা করো- তাদেরই সমবেত ফল তুমি। হিংসার পূজা করে, সুখ তুমি পাবে না। দাঙ্গার পূজা করে শান্তি তুমি পাবে না। উচ্ছের চাষ করে, আপেল তুমি পাবে না।
আমাদের জীবন বড় অদ্ভুত!
খারাপ কাজ করবে তো শাস্তি পাবে। ভালো কাজ করবে, কখনো কখনো তাতেও তুমি শাস্তি পাবে।
ব্যাপারটা তাহলে কে দাঁড়ালো? জীবনে, যন্ত্রণা তুমি পাবেই। কোন কোন দিন নয়, প্রতিমুহূর্তে তুমি যন্ত্রণা পাবে।
অন্তরে, প্রতি মুহূর্তে, ছোট বড় এতো সংঘাত চলছে!
তারা কি-
তোমার দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ক্ষত বানিয়ে দেয় না?
তোমার মনকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় না?
ডায়াবিটিস, হাই ব্লাড প্রেসার, ক্যান্সার, মানসিক রোগ ইত্যাদি সবই তো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানসিক সংঘাতের সঙ্গে যুক্ত।
তোমার দেহ আর মনের মধ্যে এই যে অনবরত কবর খুঁড়া চলছে, তার প্রতিকার কি?
ফুটো বালতিকে যদি ভরা রাখতে চাও, তো কি করো। বালতিকে তুমি একটা জলের ট্যাপের নীচে রেখে দাও।
তোমার মধ্যে প্রতিমুহূর্তে দৈহিক আর মানসিক ক্ষত তৈরী হচ্ছে,
সেই ক্ষত, ভবিষ্যতে যাতে ভয়াবহ না হয়ে যায়
তার জন্য তোমাকে প্রতিদিন নিরাময়ের অভ্যাস করতে হবে।
মেডিটেশন খুব বোরিং ব্যাপার। তা সবার কম্ম নয়।
তাই তোমাকে কিছু আনন্দময় জিনিস
প্রতিদিন করতে হবে। প্রতিদিন।
নদীর ধারে হাঁটা। পার্কে চুপ করে বসে থাকা। গান গাওয়া বা গান শোনা। কবিতা পড়া বা কবিতা লেখা। নাচের অভ্যাস করা, পেন্টিং করা ইত্যাদি। এই ধরণের ভালোবাসার কিছু জিনিস, তোমার জীবনে থাকতে হবেই।
এরা প্রত্যেকেই মেডিটেশনের সমকক্ষ। বিশেষ করে ভালো দর্শন সমৃদ্ধ কবিতার কোন তুলনা হয় না। এই ধরণের কবিতা, তোমাকে তোমার উৎস খুঁজতে বাধ্য করে।
কে তুমি? কোথা থেকে এসেছো? তোমার পিতা কে? মাতা কে? দিনের পর রাত কেন? জোয়ার শেষে ভাঁটা কেন?
পৃথিবীতে দুঃখ কেন? যন্ত্রণা কেন? মালবিকা কে? মালবিকার ঠোঁটের স্পর্শ কি? তার দাঁতের দংশন কি?
এইসব প্রশ্ন করতে করতে, তুমি যেন কোথায় হারিয়ে যাও। তোমার মনের মধ্যে, এক তৃপ্তি আসে। প্রশান্তি আসে। একটা শিশু মায়ের কোলে ফিরলে, হৃদয়ে তার যেমন প্রশান্তি হয়, তেমনি এই সব প্রশ্ন নিজেকে করলে- সেই ধরণের প্রশান্তি হয়।
আমার অনুরোধ- তোমরা এই ধরনের কবিতা প্রবন্ধ আর গল্প বারবার পড়ো।
রাজনীতির হানাহানি আর গসিপ ম্যাগাজিনের গুজব ইত্যাদি পড়লে- মনের মধ্যে কি হয়? রাগ হয়, ঘৃণা হয়, বিদ্বেষ হয়, হিংসে হয়। এরা প্রত্যেকেই তোমার দেহ আর মনের পক্ষে ক্ষতিকর। এক ফোঁটা বিষ পান করলে তোমার যা ক্ষতি হয়; এই ধরনের ধ্বংসাত্মক জিনিস পড়লে, সেই একই ক্ষতি হয়।
তুমি বিষ পান করবে, অথচ জীবনে সুখ আর শান্তিতে থাকতে চাইবে; তা জীবনে তোমার ঘটবে কেন?
শ্বাসে নিলে শান্তি
প্রশ্বাসে মিলে প্রশান্তি।
শ্বাসে নিলে বিষ
তুমি জ্বলবে অহর্নিশ।
তুমি যা খাও, যা পান করো, যা চিন্তা করো- তাদেরই সমবেত ফল তুমি।
© অরুণ মাজী
Painting: John William Godward
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem