মানুষ যদি
পাপ-পুণ্য, সত্য-মিথ্যা, ঠিক-ভুল, শ্লীল-অশ্লীল ইত্যাদির
চুলচেরা বিশ্লেষণ নিয়েই ব্যস্ত থাকবে,
তো মানুষ বাঁচবে কখন? গাইবে কখন? নাচবে কখন?
জীবনে তুমি সুখ বা আনন্দ পেতে জন্মেছো?
অথবা ঠিক-ভুল, শ্লীলতা-অশ্লীলতার বিচার করে,
অন্যকে আর নিজেকে যন্ত্রণা দিতে জন্মেছো?
পৃথিবীর অর্দ্ধেক লোক পাপী, অর্দ্ধেক লোক সাধু।
যারা সাধু, তারাও কখনো কখনো পাপ করে।
আর যারা পাপী, তারাও কখনো কখনো পুণ্য করে।
ব্যাপারটা তাহলে দাঁড়ালো কি?
আমরা সকলেই পাপী। সকলেই পুণ্যবান।
চালুনি হয়ে, আমরা অন্যের ছিদ্র খুঁজি কি করে?
তোমরা জানো- আমি মুখ্যু বলে, আমি কেবল
সরলরেখায় হাঁটি। জটিল পথে আমি, ঘেঁটে ঘ হয়ে যাই।
আমি তাই সবকিছুর সরল সংজ্ঞা আবিষ্কার করেছি।
সেটা কেমন?
যা কিছু মানুষের যন্ত্রণা নিবারণ করে, আমার কাছে
তাই সত্য, তাই ন্যায়, তাই শ্লীলতা, তাই পুণ্য।
ধরো কোন একটি দরিদ্র্য যুবতী, পেটের জ্বালায়
পতিতাবৃত্তি শুরু করলো। তোমাদের পন্ডিত আর ভদ্রলোক
মেয়েটিকে পাপী, কলঙ্কিনী, বা নরকের কীট বলবে।
উন্মাদ অরুণ মাজী কিন্তু তা বলবে না। কেন?
পতিতাবৃত্তি যেহেতু মেয়েটিকে দারিদ্র্য আর অনাহারের
যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে, তাই মেয়েটির পতিতাবৃত্তি
দেবতা পূজার মতোই পুণ্য এবং শ্লীলতাযুক্ত একটি কর্ম্ম।
এখানে, "ঈশ্বর নিজে পতিতাবৃত্তি সেজে"
এইদরিদ্র্য মেয়েটির দুঃখ মোচনে ব্রতী হয়েছে।
অনাহারে মানুষের মৃত্যুকে যারা অশ্লীলতা বলে না,
অথচ পতিতাবৃত্তিকে অশ্লীল বলে,
অরুণ মাজী সেরকম পন্ডিত বা ভদ্রলোক কখনো হবে না।
মানুষের হৃদয় মন্দিরকে যারা পূজা করে না
অথচ পাথরের প্রতিমাকে দিনরাত পূজা করে;
অরুণ মাজী মরে গেলেও, সে রকম ধার্মিক কখনো হবে না।
তোমরা আমাকে ঘৃণা করতে পারো, বা আমার নামের উপর
শুঁশু করতে পারো। কিন্তু আমাকে তোমরা
মানুষের যন্ত্রণা মুক্তির পথ থেকে সরাতে পারবে না।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem