যদি শান্তির যাত্রী হতে চাও, নিঃশর্ত বিশ্বাস করো। তুমি শান্তি পাবে।
যদি সত্যের যাত্রী হতে চাও, অনুসন্ধান করো। তাতে তুমি কিন্তু ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত হবে। তোমার কপাল ভালো থাকলে, সত্যের এক ঝলক হয়তো- দেখতেও পাবে।
প্রথম পথটা অপেক্ষাকৃত সহজ। কিন্তু দ্বিতীয় পথটা ভয়ঙ্কর দুর্গম।
প্রথম পথটা সাধারণ মানুষ হাঁটে। কিন্তু দ্বিতীয় পথটা কেবল যুগপুরুষদের জন্য। বুদ্ধ, স্বামীজী, কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও, আইনস্টাইন- এরা দ্বিতীয় পথে হেঁটেছিলেন।
এই মহাপুরুষরাও কেবল হেঁটেছিলেন। কিন্তু সত্যের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারেন নি। এরা সত্যের এক ঝলক দেখেছিলেন।
সতের পথে হাঁটার চেষ্টাই ঢের। ব্যর্থ হলেও তারা মহাপুরুষ হিসেবে বেঁচে থাকবেন। সত্যের পথ এতোই দুর্গম, কেউই সে পথে হাঁটতে চায় না। অবশ্য মিথ্যে নাটক করার মতো লোকের অভাব নেই। সকলেই বলে, আমরা সত্যের যাত্রী, কিন্তু বাস্তবে কেউ নয়।
সত্যের আকার এই মহাবিশ্বের আয়তনের সমান। তাকে কোন মানব-ই কোনদিন সম্পূর্ণ ভাবে জানবে না। যুগপুরুষরাও কেবল তার খন্ড দেখতে পায়।
একটা উকুন যখন হাতির দাঁতে বসে, তখন সে বলে- হাতি তেলতেলে।
সে যখন হাতির শুঁড়ে বসে, তখন সে বলে- হাতি একটা নলের মতো।
সে যখন হাতির কানে বসে, তখন সে বলে- হাতি থালার মতো।
সে যখন হাতির পিঠে বসে, তখন সে বলে- হাতি সমতলের মতো।
আসলে হাতি কিন্তু, এদের কোনটার মতো নয়। হাতি কেবল হাতির মতো দেখতে। মানুষের পক্ষে সত্য দেখা, উকুনের হাতি দেখার মতো।
সুভাষ বসুকে আমি বলি- মহাপুরুষ। ইংরেজরা বলে- উগ্রবাদী। কোনটা সত্য? নেলসন ম্যান্ডেলাকে আফ্রিকানরা বলে- মহাপুরুষ। ইংরেজরা বলে- উগ্রবাদী। কোনটা সত্য? তুমি বলো- ঈশ্বর আছেন। তোমার বন্ধু বলে- ঈশ্বর নেই। কোনটা সত্য?
যারা সুখ আর শান্তিতে থাকতে চাও, তাদের জন্য নিঃশর্ত বিশ্বাস খুব ভালো পথ। যারা ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত হয়ে হাহাকার করতে চাও, তাদের জন্য সত্যের পথ আদর্শ পথ।
© অরুণ মাজী
Painting: Rassouli
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem