তোমার সত্য আমার সত্য নয়। আমার সত্য তোমার সত্য নয়। প্রত্যেকের সত্যের উপলব্ধি গড়ে উঠে- তার নিজস্ব শিক্ষা, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদির উপর ভর করে। তাই আমি যা বলছি- তা তোমার কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
তোমাদেরকে বারবার বলি- আমি যা বলছি, তা তোমরা কখনো 'একমাত্র সত্য' বলে গ্রহণ করো না। তবুও আমি বলি কেন?
আমি বলি- তোমাদের মস্তিষ্ককে খুঁচিয়ে দেওয়ার জন্য। তোমাদেরকে চিন্তা করতে বাধ্য করার জন্য। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- কেবল মাত্র, কেবল মাত্র তোমার চিন্তা শক্তির গুনেই, তুমি আজকের অপেক্ষা আরও ভালো মানুষ হতে পারবে। চিন্তা বিহীন শিক্ষা, কোন কম্মের নয়। চিন্তা বিহীন কর্ম, কোন কম্মের নয়। কেবল চিন্তাতেই তোমার যন্ত্রণা মুক্তি।
যে নিজে নিজে চিন্তা করতে পারে, সেই কেবল জীবিত। বাকিরা সব জীবন্ত মৃত!
সত্যের উপরোক্ত সীমাবদ্ধতাকে গ্রহণ করে আমি বলতে পারি- কিছু আণুবীক্ষণিক ব্যতিক্রম ছাড়া, নিঃস্বার্থ ভালাবাসা কেবল পিতা-মাতার কাছ থেকেই পাওয়া যায়। খুবই দুর্ভাগ্যের, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দাম্পত্য জীবনে অতি দুর্লভ।
পিতা মাতাকে ভুলে যেও না। তারাই একমাত্র মানুষ, যারা তোমার কাছ থেকে কখনো কিছু আশা না করেও, তোমাকে ভালোবাসে। প্রেম এক উন্মাদনা। সেখানে- কামনার আঁশটে গন্ধ লেগে, যৌবনের সর্ব্ব বিধ্বংসী আগুন লেগে, স্বার্থের কালো শিকড় জড়িয়ে। প্রেম কেবল অরুণ মাজীর কবিতায় সুন্দর। প্রেম কেবল জন গডওয়ার্ডের পেন্টিং-এ সুন্দর। প্রেম কেবল হুইটনি হাউস্টনের সংগীতে সুন্দর। কিন্তু মানুষের ব্যবহারিক জীবনে? তা- বেশির ভাগটা আগুন, একটুখানি অমৃত।
কেউ কি তবে ভাগ্যবান নেই? আছে। তবে তা নিতান্ত দুর্লভ। তবুও তা পিতা-মাতাকে অবহেলার, যথেষ্ট কারন নয়। তাবলে প্রেমে কি তোমরা পড়বে না? আলবৎ পড়বে। একশোবার পড়বে। হাজারবার পড়বে। কারণ প্রেমের মধু একটুখানি হলেও, তা স্বর্গীয়। কিন্তু সেই দুষ্প্রাপ্য অমৃতের জন্য, প্রাচুর্য্যভরা পিতামাতার দেওয়া অমৃতকে কখনো অপমান করো না। আগে পিতা মাতার প্রেমে পড়ো, তারপর অন্যের প্রেমে পড়ো।
আসলে কি জানো? দাম্পত্য জীবনের হাঁড়িকাঠে, মানুষের গলা এমন ভাবে আটকে যায় যে, মানুষ যন্ত্রণায় আর্তনাদ করলেও, আর বেরিয়ে আসতে পারে না।
কি দুর্ভাগ্য মানুষের! মানুষেরই সৃষ্ট প্রথা আর সংস্কার, মানুষের রক্ত দিনরাত চেঁটে পুঁটে খায়।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem