মনে কি পড়ে? সরাইখানার কথা,
নাজিয়া?
মনে কি পড়ে? সরাইখানার কথা?
আর সে ছড়ানো খড়-বিচালি
শুকনো ঘাসের সেই বিছানা,
দূরপাহাড়ের নীল নীল যত মাছিদের জ্বালাতন
আর ওয়াইন, আলকাতরার মতই যে তার স্বাদ?
পানপাত্রের ঠোকাঠুকি আর হর্ষধ্বনি, ব্যঙ্গ-কোলাহল,
তরুণ সকল খচ্চর-চালকের;
(বারান্দাময়, লতানোগাছের তলার অন্ধকারে)
মনে পড়ে কি? সরাইখানার কথা, নাজিয়া?
মনে কি পড়ে? সরাইখানার কথা?
আর সেইসব ঠোকাঠুকিময় হর্ষধ্বনির কথা,
তরুণ সে সব খচ্চর-চালকের,
যাদের পকেট ফাঁকা,
পান শেষে, তারা যে দিতেই পারেনি টাকা!
আর দরোজায় হাতুড়ির ঘাঁই, বিকট হট্টোগোল,
আর লাফালাফি, ঝইঝই ঝকমারী,
আর হাততালি,
ঘূর্ণির মত হাতের ভঙ্গি থেকে,
আর মেয়েদের সজ্জা-বদল,
আগে ছুটে যাওয়া, পিছে ছুটে আসা,
দেহের ঝিলিক ও নাচ,
হঠাৎ হঠাৎ ভেতরে-বাইরে
তুমুল করতালি,
আর গীটারের টুংটাং সুরে অবিরাম বেজে চলা,
মনে কি পড়ে? সরাইখানার কথা,
নাজিয়া?
মনে কি পড়ে? সরাইখানার কথা?
তারপর আর নেই সেই কোলাহল;
নাজিয়া,
সেইসব আর নেই।
অদূরে কেবল পাহাড়শীর্ষ ধুসর তাকিয়ে আছে;
সেই পুরনো আরাগঁ-রাজ্যের তীব্র বৃষ্টিপাত
সরাইখানার দুয়ারে আছড়ে পড়ে।
আর নাই কোনও শব্দের মাতামাতি
দেয়ালে-মেঝেতে, যাদের পায়ের শব্দ ফুটতো
তারা সব আজ মৃত;
আর নাই কোনও শব্দের মাতামাতি:
শুধু ওই দূর জলপ্রপাতের গর্জন ভেসে আসে
সর্বনাশের মত।
* Bengalized by Rahman Henry
** Original:
Tarantella- Poem by Hilaire Belloc