আমার প্রিয় বই মহাভারতঃঃ মাধবী বন্দ্যোপাধ্যায়
‘মহাভারতের কথা অমৃত সমান
কাশীরাম দাস কহে শুনে পূন্যবান'
ঠাকুমার মুখে সুর করে পড়া এই পঙতিটি শুনে আমার মহাভারত পড়ার আগ্রহ হয়
যদিও অমৃত কি জিনিস সেটা তখন আমি জানতাম না।
ঠাকুমা বলত মহাভারত খুব বড় বই বড় হলে পড়তে হয়
ছোটরা মহাভারত পড়ে কিছুই বুঝতে পাড়বে না।
একটু বড় হয়ে মহাভারত পড়া শুরু করি এবং শেষও করি একদিন
পড়তে গিয়ে দেখলাম ঠাকুমা যত সহজে সুর করে পড়ে আমার সে সুর হচ্ছে না
বোঝার ক্ষেত্রেও দেখা গেল যথরীতি আমি কিছুই বুঝিনি।
এরপরে যখনি মহাভারত পড়েছি বয়সানুপাতে যেটুকু
জানার সেটুকুই জেনেছি
এর বাইরে যা থেকেছে সেটা অবোধ্যই থেকে গেছে।
এ ভাবেই জীবনের ধাপে ধাপে মহাভারত পড়া আর আমার জানা।
মহাভারত পড়ে আমার মনে হয়েছে মহাভারত হল আমার কাছে মহাসাগর
সাগর মন্থনে যেমন অমৃত পাওয়া যায় মহাভারত কথা মন্থনে অমৃত মেলে
সাগরের যেমন জল সম্পদ রত্নরাজি অপরিমেয় মহাভারতও এক অতলান্ত জ্ঞানের সাগর
সে জ্ঞান মাপা যায় না এ জ্ঞান সাগরের কুলেরও দেখা মেলে না।
কৃষ্ণদ্বৈপায়ণ ব্যসদেব স্বয়ং মহাভারতকে ‘হিমালয়ের'তুল্য মনে করেছেন।
মহাভারত হিমালয়ের মতই দুর্গম দুর্বোধ্য দুর্জ্ঞেয় দুর্লভ দুরবগম্য
হিমালয়ের প্রতিটি বাঁকে যেমন নুতনের আস্বাদন করা যায়
একটি বাঁক অপর বাঁকের থেকে সুন্দর, ভয়ংকর।
মহাভারতেও হিমালয়ের মতো প্রতিটি পদক্ষেপে সতর্কতা প্রয়োজন
একটু অসর্কতায় বোধের অগম্য।
হিমালয়ের শির্ষে উত্তরণে যেমন প্রশিক্ষন প্রয়োজন
মহাভারত পাঠেও তেমই প্রয়োজন প্রশিক্ষনের
হিমালয়ের প্রতি যেমন আমার এক অদম্য টান
তাই তো প্রতি অবসরে আমি হিমালয়ে যাই
এবং প্রতিবারই আমি নুতন কিছু পাই', নুতন কিছু আস্বাদন করি
সেইরূপ প্রতি অবসরে আমি মহাভারত পড়ি
প্রতিবারেই আমি নুতন কিছু জীবনবোধ আস্বাদন করি।
মহাভারত কোনো বিশেষ ধর্ম সম্প্রদায়ের নয়
মহাভারত একটি ইতিহাস গ্রন্থ যেখানে জীবনের ইতিহাস বর্নিত
আর জীবন তো চিরন্তন ধ্রুবক যা দেশকাল যুগকে অতিক্রম করে।
যাকে আমরা বলি মানব ধর্ম।
শুধুমাত্র সাতশত শ্লোক্ নয়
সমগ্র মহাভারত আমার কাছে গীতা যেখানে পার্থসারথী পরিচালক।
আমার প্রিয় গ্রন্থ মহাভারত।।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem
Beautiful presentation on Mahabharat. Pleasant to read. Thanks for sharing.
thanks a lot.