সাত স্তবক ।। ইওসিফ ব্রৎস্কি
●
.
যা কিছুকে তোমার হাতের তালু দিয়ে
বিলি কাটবে, তোমার শায়িত ভ্রূ, সন্ধ্যার
কাক-কালো অন্ধকারে যা দেখে কুঁচকাবে,
ওসব ছাড়া আর কিছুই নই আমি।
তোমার নজর অন্ধকারের ভেতর যা কিছুকে
পৃথক করতে পারবে: অস্পষ্ট আকার থেকে
শুরু হয়ে, পরে— মুখের একটা আদল ফোটানো
ও ছাড়া, আমি আর কিছুই নই।
আমার ডান পাশে, আমার বাম পাশে,
গরম নিঃশ্বাসসহ, যে কিনা ফিসফাস
আওয়াজ তুলে, আমার স্ক্রু'টাকে চটকাচ্ছিলো
সে তুমি ছাড়া আর কেউ নয়।
ওটা তুমিই ছিলে, ওই অন্ধকারাচ্ছন্ন জানালার
কম্পমান মসলিন পর্দার পাশে
একটা কণ্ঠস্বরের আহ্বানে যে এসে
আমার অমসৃণ গুহায় শুয়ে ছিলো।
বাস্তবে, আমি ছিলাম অন্ধ।
তুমি, পৌঁছালে, তারপর লুকিয়ে পড়লে,
আমাকে দৃষ্টি দিলে, আর তাতে দিলে
উচ্চতা। এভাবেই কিছু একটা সরে গেলো
বারান্দার পেছনে। এভাবে সে সৃষ্টি করলো জগতসমূহ।
এভাবেই, সব কাজ সম্পন্ন করে, নির্বিকারভাবে
নিজ ঘূর্ণনের মধ্যে অপচয়ের মত
বাতিল করলো তার কর্মসকল।
এভাবে, আলো, উত্তাপ, শৈত্য বা
অন্ধকারের শিকার হয়ে
মহাশূন্যে একটা গোলক, কোনও চিহ্ন না রেখেই
অবিরাম ঘূর্ণিপাক দিতে থাকলো।
.
●
.
#বাঙলায়ন: #রহমানহেনরী; #Bengalized by #RahmanHenry
.
* ইওসিফ ব্রৎস্কি (২৪ মে ১৯৪০ - ২৮ জানুয়ারি ১৯৯৬) : সোভিয়েত-মার্কিন কবি। পুরো নাম: ইওসিফ অালেক্সান্দ্রোভিচ ব্রৎস্কি; পরবর্তী জীবনে মার্কিন নাগরিক হবার সুবাদে, তিনি, যোসেফ ব্রডস্কি নামেও পরিচিত। ব্রৎস্কির জীবনে সবকিছুই ঘটেছিলো খুব দ্রুততার সাথে। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিনগ্রাদে জন্মানো এই কবি সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের বিরাগভাজন হয়ে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কবি ডব্লিউ এইচ অডেনের সহায়তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পোয়েট লরিয়েট নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ব্রৎস্কি, ১৯৬২-১৯৬৭ সময়কালে, বান্ধবী মারিনা বেসমানোভার সাথে অবিবাহিত দাম্পত্যজীবন যাপন করেন এবং ১৯৯০-১৯৯৬ সময়কালে (মৃত্যুর আগে পর্যন্ত) মারিয়া সোজানির সাথে বিবাহিত দাম্পত্যজীবন কাটান। প্রথমোক্ত জীবনে এক পুত্র ও দ্বিতীয়োক্ত জীবনে এক কন্যাসন্তানের জনক তিনি।
.
*
#JosephBrodskyPoems
.