বেলঘরিয়াতে
মাধবী বন্দ্যোপাধ্যায়
পাড়ার পাঁচ থেকে কুড়ি বছরের সাথীদের আমি লীডার
এই লীডার দিদিটির ওপর বড় ভরসা ওদের।
কেননা ছুটি পড়লেই-কখনো সিনেমা দেখাতে পি সি সরকারের জাদু দেখাতে
কখোনো দক্ষিনেশ্বর জাদুঘর চিড়িয়াখানা দেখাতে নিয়ে যায়।
আবার এগরোল আলুকাবলিও খাওয়ায়।
এবার পরীক্ষার পর ভেবেছি বিড়লা ইন্ডস্ট্রিয়াল মিউজিয়াম দেখাতে নিয়ে যাব।
মায়ের অনুমতির জন্য প্রয়োজনীয় কাজটি করে যাচ্ছি
মানে স্নান সেরেই বইখাতা নিয়ে বসে পরছি, ভাল নম্বর পেতেই হবে।
রেজাল্ট বেরনোর পর দেখা গেল নম্বর ভালই। মায়ের মেজাজও ভাল
সুযোগ বুঝে বলে ফেললাম ওদের কলকাতা দেখিয়ে আনি।
অন্যের ছেলেমেয়ে নিয়ে যাবি সাবধানে যাবি
বললাম এখান থেকে উঠে ওখানে নামব তো'
মায়ের অবশ্য এখান আর ওখানের কোনো ধারনা নেই
ধর্মতলা নেমে হাঁটতে হাঁটতে মনুমেন্টের কাছে গেলাম।
ওদের বোঝাচ্ছি-পুরোনাম অক্টারলনি মনুমেন্ট। ১৫৭ ফুট উঁচু
ইষ্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর কমান্ডার স্যার ডেভিড অক্টারলনির
স্মৃতিতে এই স্মৃতিস্তম্ভ।
ততক্ষনে আমার মাথায় ঢুঁকে গেছে এর উপরে উঠতে হবে
উপর নীচে তাকাতে তাকাতে বলেই ফেললাম
‘কাকু উপরে ওঠা যাবে? '
‘পারমিশন লাগবে লালবাজারের'
‘কাকু সেই বেলঘরিয়া থেকে এসেছি বাচ্চাদের নিয়ে
(যেন আমি খুব বড়)লালবাজার তো চিনি না
তবে লালবাজারে আমার মামা পুলিস
পুলিস দু'জন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কি বুঝল কে জানে
বলল ‘যাও বেশি দেরী করবে না, নিচে ঝুকবে না
তখন আমাকে পায় কে? আবার একটা দাদাগিরি
সবাই আনন্দে যেন এভারেষ্টের চূড়ায় উঠছি।
গৌতম বলল ‘দিদি তোমার জন্য এত উঁচু মনুমেন্টে উঠতে পারলাম,
তুমি হীরো।জীবনে ভুলব না। সবাই তো এখানে উঠতে পারে না'।
এরপর অনেক অনেক উঁচুতে উঠেছি, অভিযান করেছি
মনুমেন্টের উপরেওঠার মজাটাই ছিল আলাদা।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem