প্রথমে বন্ধনা করি আল্লাহ মালেক সাঁই, দ্বিতীয়ে আল্লাহর বন্ধু নূর নবীজি জানেন সবাই।
শোনেন শোনেন ভাইবোন সকল শোনেন দিয়া মন, বদ্বীপ ভোলার কিসসা সংক্ষেপে করিব বর্ণন।
বঙ্গপোসাগর কূলে ভাসে ভূখণ্ড বদ্বীপ ভূমি, তারিই নাম ভোলা জেলা সকলে যায় চুমী।
বেতুয়া খালের পড়ে পাটুনি এক ভোলা গাজি, তারই নামে ভোলা নামকরণে সবাই ছিল রাজি।
ভোলার আরেক নাম শাহবাজপুর ভাই, সেই খবরটা ইতিহাসের পাতায় আছে তাহাও জানাই।
ওরে ভাইবোন সকলে শোন দিয়া মন, ভোলার জমিন কান্দে গত যুদ্ধের কামান গর্জন।
একদা ভোলায় আসে মগ পূর্তগিজ, সেই তারা নির্যাতনের চালাতো লুণ্ঠন সিরিজ।
এই খবর মোঘল সম্রাট কানে লোক মুখে যায়, আকবর তীরনদাজ বাহিনীসহ প্রধান শাহবাজকে পাঠায়।
তারই হাতে মুক্ত হইল উত্তর দক্ষিণ এ বদ্বীপ, সেই থেকে ব্যবসা বাণিজ্যে আসে হাজার হাজার শিপ।
ব্রিটিশ সরকার বানায় এ অঞ্চলে লবণের কল, লবণ নিয়া তারা করতো হাজার রকম ছল।
তাদের আত্যাচারে লবণ বিদ্রোহ করল ভোলার জনগণ, গুর্খা বাহিনীর গুলিতে চারজনের হইল মরণ।
তারপরে সত্তর সালের জলোচ্ছ্বাস ভাই, লক্ষ লক্ষ মানুষ মরল হিসাব জানা নাই।
কত যে আসে ঘূর্ণি কত যে তুফান, উড়িয়ে নেয় বাড়ি-ঘর মহিষ গরু কত সরল প্রাণ।
মেঘনা তেতুলিয়ায় গর্জন এতটাই হয়, বাদুরা জাহাজ ডুবে যেথা সেথায় কালা বাদুর কয়।
মানুষের চোখে জল বুকে আর্তনাদ, প্রকৃতির রুদ্রে ভাই কী জানি ছিল মোদের অপরাধ।
তবুও ভোলার মাটি খাঁটি বড়ই উর্বর, ধনে-ধান্যে ভরে থাকে কৃষকের সারাটা বছর।
সোনালি ফসলের দোলা বাতাসেতে বয়, সুপারি আর নারকেলের ফলন একটু বেশী হয়।
নদীতে ইলিশের মেলা জেলের মুখে হাসি, জীবন কাটে স্বপ্ন আশা সুখ-দুঃখ বারোমাসি।
এই ভোলার মাটির তলে রে ভাই আছে কত না রতন, শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রগুলো দেশের প্রয়োজন।
গ্যাসের আলোয় জ্বলে কলকারখানার বাতি, ভোলার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে তাই উচ্ছ্বাসে দিন মাতি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলো ভোলার বুকে আলো, অন্ধকার ঘুচিয়ে এবার বুঝি এলো সোনালী দিনগুলো ।
আশা জাগে মানুষের রইবে ভোলার মান, সুদিনের দেখা মিলবে একদিন হবে দুঃখের পরিত্রাণ।
ভোলার বুকে আছে আরও কত সুন্দর ছবি, পর্যটনের হাতছানি দেয় আল্লাহর দেয়া রবি।
আছে ভাইরে স্কুল কলেজ পৌর ভবন জেলাপরিষদ, ইলিশ বাড়ি আরও আছে চারুশিল্পে গড়া মসজিদ।
নান্দনিক জ্যাকব টাওয়ার ভোলার একটা ম্যাজিক, দূরবীনে ভাসে ভাইরে অদেখা অসংখ্য লজিক।
চারিপাশে আছেরে ভাই কত সুন্দর চর, কুকরি মুকরি তারুয়া সমুদ্র সৈকত যেন প্রকৃতির ঘর।
মনপুরায় নিত্য বসে কত হরিণের মেলা, পর্যটকের ভিড় জমে দিন-রাত বেলাঅবেলা।
সুন্দরবনের প্রতিরূপ দেখ একবার ভোলায় আসি, মহিষের দুধের দই খেলে মুখে থাকবে তোমার হাসি।
হাজার কষ্টের মাঝে কাটে ভোলার জনগণ, জীবন যুদ্ধে হার না মানা হার লড়াই চলে সর্বক্ষণ।
ঝড়জঞ্জা প্লাবন নদীর ভাঙনে স্বপ্নভঙ্গ বটে, নতুন বিশ্বাসে আবার তারা ঘর বাঁধে অন্য তটে।
শিক্ষার আলো জ্বলেরে ভাই স্কুল-কলেজ গড়ে, ভবিষ্যতের বীজ বুনে যায়, নতুন স্বপ্ন ধরে।
এই ভোলার প্রতি মহান আল্লাহ রাখ কৃপাদৃষ্টি, শান্তি আর সমৃদ্ধি আসুক থামুক দূর্বৃষ্টি।
নদীর ভাঙন হোক বন্ধ ঝড় তুফান থামুক, ভোলার মানুষের জীবনে সুখের ধারা নামুক।
আল্লাহর কাছে দোয়া মাঙ্গি বারেবার, ভোলার সুখ্যাতি বাড়ুক সর্বদিকে শুনি যেন জয়জয়কার।
এই ছিল ভোলার পুঁথি শুনলেন ভাইবোন সকল, ভুল ত্রুটি মাফ করবেন যার না আছে নকল।
এবারে আল্লাহ হাফেজ পুঁথি করলাম শেষ, তার কাছে নতজানু তার রহমতের ভান্ডার অশেষ।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem