তরিকা কি আর এর দরকারই বা কি ৫।।? (Torika Ki Ar Er Dorkari Ba Ki ৫।।?)) Poem by Rhymer Rhymer

তরিকা কি আর এর দরকারই বা কি ৫।।? (Torika Ki Ar Er Dorkari Ba Ki ৫।।?))

পীর মুরিদ কি?
পীর শব্দটি ফার্সি
আরবীতে বলা হয় মুরশীদ
মুরশীদ শব্দের অর্থ হল পথপ্রদর্শক
যিনি আল্লাহর আদেশ নিষেধ আল্লাহ তাআলা যেভাবে চান সেভাবে পালন করার প্রশিক্ষণ দেন তার নাম মুরশীদ বা পথপ্রদর্শক। যাকে ফার্সীতে বলে পীর।
"মুরীদ" শব্দটিও আরবী
যার অর্থ হল ইচ্ছাপোষণকারী
যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ নিষেধ আল্লাহ তাআলা যেভাবে চান সেভাবে পালন করার ইচ্ছা পোষণ করে কোন বুযুর্গ ব্যক্তির হাত ধরে শপথ করে, সে ব্যক্তির নাম হল "মুরীদ"
এ ব্যাখ্যা থেকে একথা স্পষ্ট হল যে, পীর হবেন শরীয়তের আদেশ নিষেধ পালন করার প্রশিক্ষণদাতা
আর যিনি সে প্রশিক্ষণ নিতে চায় সে শিক্ষার্থীর নাম হল "মুরীদ"
সুতরাং যে ব্যক্তি নিজেই শরীয়তের বিধান মানে না, নামায পড়ে না, পর্দা করে না, ছতর ঢেকে রাখে না বা শরীয়তের আবশ্যকীয় কোন বিধান পালন করে না, সে ব্যক্তি কিছুতেই পীর তথা মুর্শীদ হতে পারে না। কারণ তার নিজের মাঝেই যখন শরীয়ত নেই
সে কিভাবে অন্যকে শরীয়তের উপর আমল করা প্রশিক্ষণ দিবে?
নিজেইতো প্রশিক্ষিত নয়।
কবে থেকে এ প্রথা শুরু?
উত্তরঃ আর পীর মুরীদির এ পদ্ধতি রাসূল (সাঃ)থেকে চলে আসছে
রাসূল (সাঃ) সাহাবাদের আল্লাহমুখী হওয়ার প্রশিক্ষণ দিতেন
সাহাবারা রাসূল (সাঃ)এর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতেন
বলা যায় রাসূল (সাঃ)হলেন সবচে'প্রথম ও বড় পীর, ও সাহাবায়ে কিরাম হলেন প্রথম মুরীদ
পীর ধরা কোরআনে আছে কি?
হ্যাঁ পীর ধরতে হবে, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন পাকে বহু নির্দেশ আছে
পীর ফার্সি শব্দের প্রতিশব্দ পবিত্র কোরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শব্দে প্রকাশ করেছেন,
যথাঃ'অলি'বহুবচনে আউলিয়া, মুর্শিদ, ইমাম, বহুবচনে আইম্মা, হাদি, ছিদ্দিকিন, ইত্যাদি
নিম্নে কিছু আয়াত শরিফের অর্থ পেশ করা হলঃ
হে মুমিনগণ! তোমরা অনুসরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক (দঃ)এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা ধর্মীয় নেতা
— সুরাঃ নিসা, আয়াতঃ ৫৯
স্মরণ কর! সেই দিনকে যেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাঁদের (ইমাম)নেতা সহ আহ্বান করব
— বনি ইসরাইল, আয়াতঃ ৭১
মুমিন পুরুষ ও মুমিনা মেয়েলোকের ভিতর হতে কতেক কতেকের বন্ধু
— সুরাঃ তাওবাহ, আয়াতঃ ৭১
তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে
— সুরাঃ আল-ইমরান, আয়াতঃ ৭১
অনুসরন কর তাঁদের যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাহে না, এবং যারা সৎ পথ প্রাপ্ত
— সুরাঃ ইয়াসিন, আয়াতঃ ২১
যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তাঁর পথ অনুস্মরণ কর
— সুরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৫
জিকির সম্বন্ধে তোমাদের জানা না থাকলে জিনি জানেন তাঁর নিকট হতে জেনে নাও
— সুরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ৭
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (ছাদেকিন)সত্যবাদী গণের সঙ্গী হয়ে যাও
— সুরাঃ তাওবাহ, আয়াতঃ ১১৯
নিশ্চয়ই আল্লাহ্পাকের রহমত(মুহসিনিন)আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী
— সুরাঃ আরাফ, আয়াতঃ ৫৬
আল্লাহ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথ প্রাপ্ত হয় এবং তিনি (আল্লাহ্)যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনো তাঁর জন্য কোন পথপ্রদর্শনকারী (মুরশিদ)পাবে না
— সুরাঃ কাহাফ, আয়াতঃ ১৭
সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর অলিগণের কোন ভয় নেই, এবং তারা কোন বিষয় এ চিন্তিতও নহ।তাঁদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে, আল্লাহর কথার কোন পরিবর্তন হয় না, উহাই মহা সাফল্য
— সুরাঃ ইউনুছ, আয়াতঃ ৬২-৬৪
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ পাককে ভয় কর, এবং তাকে পাবার জন্য(নৈকট্য লাভের) অছিলা তালাশ কর
— সুরাঃ মায়েদা, আয়াতঃ ৩৫ / (সুন্নি পিডীয়া থেকে)
উছিলা অর্থ কি?
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণকে স্মরণ করে তাদেরকে মাধ্যম বানিয়ে বরকত লাভ করার নাম উছিলা
আল্লাহ তা'আলা তাদের কারনেই আপন বান্দাদেরকে রহম করেন
অতএব-ঐসব নেক বান্দাগণকে উছিলা ধরার সরল অর্থ হচ্ছে-তাঁদেরকে মাধ্যম বা চ্যানেল ধরে মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য এবং মাকসুদ হাসিলের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। কেননা, তারা আমাদের তুলনায় আল্লাহর অতি নিকটে।আল্লাহ তা'আলা তাদের দোয়া ও সুপারিশ কবুল করে থাকেন।এ প্রসঙ্গে একখানা হাদিস শরীফ উল্লেখযোগ্য
আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেনঃ
"যে কেউ আমার কারনে আমার কোন ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তাঁকে যুদ্ধের জন্য আহবার জানাই । আমার বান্দা আমার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্য আমার সর্বাধিক প্রিয় যে ইবাদত করে- তা হচ্ছে আমার নির্ধারনকৃত ফরজ ইবাদত । আর তার ইচ্ছাকৃত নফল ইবাদতের মাধ্যমেও ক্রমশঃ বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে । শেষ পর্যন্ত সে আমার প্রিয় বন্ধু হয়ে যায় । আর যখন সে আমার বন্ধু হয়ে যায়- তখন আমি তার শ্রবণশক্তি (কান)হয়ে যাই- যার মাধ্যমে সে শুনতে পায় । আমি তার দৃষ্টিশক্তি (চোখ)হয়ে যাই- যার মাধ্যমে সে দেখতে পায় । আমি তার ধারণ শক্তি (হাত)হয়ে যাই- যার মাধ্যমে সে ধরে । আমি তার চলনশক্তি (পা)হয়ে যাই- যার মধ্যমে সে চলাচল করে । আর যদি সে আমার কাছে কিছু যায়- তবে অবশ্য অবশ্যই আমি তাঁকে তা দেই । আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায় তবে অবশ্যই আমি আশ্রয় দেই" ।
— বোখারী শরীফ
এতে প্রমাণিত হল-আল্লাহর প্রিয় বান্দার ডাক আল্লাহ শুনেন।তারা আল্লাহতে মিশে যান (ফানা হয়ে যান)। তাঁদের মধ্যে খোদা প্রদত্ত (কুদরতি)শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টিশক্তি, ধারণ শক্তি ও চলশক্তি এসে যায় । এগুলোকে কারামত বলে । অতএব- তাঁদের সুপারিশ আল্লাহ কবুল করেন । যেমন- লোহা আগুনের ন্যায় সংস্পর্শে এলে সে আগুনের শক্তি লাভ করে । তখন সেও আগুনের ন্যায় জালাতে পারে । তদ্রূপ- আল্লাহর ওলীগন আল্লাহ নহেন । কিন্তু ফানা ফিল্লাহ হয়ে গেলে খোদায়ই কুদরতি শক্তি লাভ করেন । তারা খোদার নিকট যা চান- তা পান ।


(সুন্নি পিডীয়া থেকে)

Monday, April 2, 2018
Topic(s) of this poem: philosophy
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Rhymer Rhymer

Rhymer Rhymer

DHAKA Tangail, BANGLADESH
Close
Error Success