জাকির নায়িক অনেককে মুসলমান করেছেন বিষয়ক:
তার কথায় শত শত হোক বা না হোক, বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ ‘ইসলাম' গ্রহণ অবশ্যই করেছে।
কাদিয়ানিদের প্রচারণায় এই বাংলাদেশেই প্রতিদিন কিছু মানুষ অন্য ধর্ম থেকে তাদের উপলব্ধি অনুযায়ী ‘ইসলাম' গ্রহণ করে। সারা পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাদিয়ানিদের দ্বারা ‘ইসলাম' গ্রহণ করেছে।
তেমনি বক্সার মোহাম্মদ আলী সাহেব প্রথমে ‘ইসলাম' গ্রহণ করেছিলেন ‘নেশন অভ ইসলাম' এর মাধ্যমে। ‘নেশন অভ ইসলাম' এর মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু নেশন অভ ইসলাম রাসূল দ.'র পরে নুবুয়্যতের দাবিতে বিশ্বাস করে, তারা বিশ্বাস করে, এই পৃথিবী তৈরি করেছে কালো (নিগ্রো)দেবতারা।
পরে বক্সার মোহাম্মদ আলী সালাফিজমে যান, অর্থাৎ জাকির নায়েকের মতাদর্শ গ্রহণ করেন এবং সবশেষে তিনি আহলে সুন্নাত এ পদার্পণ করেন। আল্লাহর শুকরিয়া, মোহাম্মদ আলীর ওয়াসিলায় ৮ লাখের মত মানুষ ইসলামকে চিনেছে। এবং লক্ষ মানুষ নেশন অভ ইসলাম নামক নুবুয়ত এবং সৃষ্টিতে শিরক দাবিদার ভ্রান্ত মেসনিক মতাদর্শ থেকে ইসলাম এ ফিরে এসেছে।
সবচে হৃদয়বিদারক বিষয় হল, কাদিয়ানিদের প্রচারণায় যারা ‘ইসলাম' গ্রহণ করে তারা শেষ পর্যন্ত রাসূল দ.'র পর নবী সাব্যস্ত করে ইসলামের বাইরে চলে যায়।
ঠিক তেমনি নেশন অভ ইসলামের মাধ্যমে যারা ‘ইসলাম' গ্রহণ করে তারাও নুবুয়ত দাবি এবং সৃষ্টিতে শিরকের দাবিতে পতিত হয়ে ইসলামের বাইরেই রয়ে যায়।
যেহেতু রাসূল দ. বলেছেন, আলাদা আলাদা অনেক হাদীস একত্র করে বলছি, ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের রক্ত আমার রক্ত, তাদের মাংস আমার মাংস, তাদের ভালবাসা আমার ভালবাসা, তাদের শত্রুতা আমার প্রতি শত্রুতা এবং হে আল্লাহ্ আপনিও তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করুন…
হাসান আমার অর্ধাংশ, হুসাইন আমার অর্ধাংশ, যে আমাকে ভালবাসে সে আলী ফাতিমা হাসান হুসাইন ও আমার সাথে একই স্থানে জান্নাতে থাকবে…
যে ফাতিমা ও তার সন্তানদের প্রতি ঘৃণা রেখে হাতিমে কাবা ও মাক্বামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী অঞ্চলে সিজদারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে-ও ইসলামের বাইরেই মৃত্যুবরণ করল…
যেহেতু রাসূল দ. বলেছেন, হুসাইন নেতৃত্বেরও নেতৃস্থানীয়, আর যেহেতু আল্লাহ্ বলেছেন, এই রাসূল দ. নিজ চাওয়া থেকে কিছু বলেন না, বরং তা সরাসরি ওয়াহয়ি হয়ে থাকে, তাই রাসূল দ.'র কথাই ইসলাম হওয়াতে, ইমাম হুসাইন রা. যখন নেতৃত্বের আহ্বান করেন, তখন হুসাইন ভিন্ন সকল নেতৃত্ব নাল অ্যান্ড ভয়েড হয়ে যায়। যেহেতু তখন হুসাইন ভিন্ন সকল নেতৃত্ব অনৈসলামিক হয়ে যায়, সেহেতু অন্য সকল নেতৃত্বকে যারা বৈধ মনে করেন, ঈমানি দিক দিয়ে তাদের বিশ্বাসও অনৈসলামিক হয়ে যায়।
তাই ইমাম হুসাইনের নেতৃত্বের আহ্বানের সময় তার বিরুদ্ধে-
যারা যুদ্ধ করেছে তারা ইসলামের বাইরে,
যারা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে তারা ইসলামের বাইরে,
যারা সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছে তারা ইসলামের বাইরে
এবং যারা সেই সেনাবাহিনীর প্রেরককে, পৃষ্ঠপোষককে, সেনাকে এবং তাদের যে কাউকে ‘রাদ্বিআল্লাহু আনহু' মনে করে এসব জানার পরও, তারা নি: সন্দেহে ইসলামের বাইরে।
কেননা, হুসাইন রা. তো ঘোষিত জান্নাতী, তিনি তো ঘোষিতভাবে জান্নাতের অধিকারী।
অপরদিকে ঘোষিত জান্নাতীকে হত্যা করা যে বৈধ মনে করে সে নি: সন্দেহে জাহান্নামী, বিপথগামী, পথভ্রষ্ট।
কেননা, রাসূল দ.'র কথা ওহীসম, আর রাসূল দ. বলেছেন, হুসাইন রা.'র রক্ত ও মাংস তাঁর রক্ত মাংসসম। যে রাসূল দ.'র রক্ত প্রবাহিত করাকে বৈধ মনে করে, যে রাসূল দ.'র রক্ত প্রবাহিতকারীকে মুসলিম মনে করে, তার সাথে বনী ইসরাঈলের নবীদের হত্যাকারীদের সাথে তফাত কী?
আমরা ভুলিনি, সালেহ্ আলাইহিস সালামের উটকে হত্যা করার কারণে আল্লাহ্ একটা জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। সালেহ্ আলাইহিস সালামের উট হত্যার পেছনে তাদেরও যুক্তি ছিল। ওই উট পানি খেয়ে ফেলে, ঘাস খেয়ে ফেলে বেশি বেশি। যা-ই হোক, তা নবীর উট।
সালেহ্ আলাইহিস সালামের উটের হাঁটু কাটার দায়ে যদি একটা জাতি ধ্বংস হতে পারে,
জান্নাতীদের সম্রাট ইমাম হুসাইনের গলা যারা কাটে তাদের সমর্থকদের আল্লাহর কাছে কোন্ মূল্যায়ন থাকা সম্ভব তা বুঝতে আমাদের এক মুহূর্তও সময় লাগার কথা নয়।
সেই ব্যক্তি ইসলামের বাইরে,
সেই ব্যক্তির মতাদর্শ ইসলামের বাইরে
এবং সেই মতাদর্শতে থেকে যে ইসলাম গ্রহণ করে-
সেই ইসলামও কাদিয়ানি এবং নেশন অভ ইসলামের মত ইসলামের বাইরে পরিগণিতব্য।
(সিরিয়াল পরের অংশে শেষ ।। গোলাম দস্তগীর লিসানী এর লেখা থেকে এডিট))
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem