আমার গর্ব খর্ব হয়েছে Poem by Madhabi Banerjee

আমার গর্ব খর্ব হয়েছে

আমার খুব গর্ব ছিল
কারণ আমি এমন এক উন্নত শতাব্দীতে ভূমিষ্ট হয়েছিআমার খুব গর্ব ছিল
কারণ আমি এমন এক উন্নত শতাব্দীতে ভূমিষ্ট হয়েছি
যখন মানুষ আকাশে চাঁদের দেশে যায়
যখন মানুষ পাতাল দিয়ে চলাচল করে
যখন মানুষ টেষ্ট টিউবে বেবীর জন্ম দেয়

যখন একটি বোতাম টিপলে হাজার যোজন দূরে
যোগাযোগ করা যায় ।
এই শতাব্দী থেকে সহস্রাব্দের উন্নতির পথে নিয়ে যেতে যারা সহায়তা করেছেন
তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আমি কবিতায় প্রকাশ করবো।
তাই আমি ইতিহাস অন্বেষণে মন দিয়েছিলাম।

সেই দুর্জ্ঞেয়ত্ব রহস্যময় ঘটনার ইতিহাস ঃ-
২৩ জুন ১৯৬০ এক রিপাবলিক দেশের নির্বাচিত এক নেতা প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হলেন

প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে পরাজিত করে নিজের দেশকে স্বাধীন করে।
দশ সপ্তাহ পরে এক অসংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা দখল হয় (কু ডে টা (coup d'eta)

এবং অবশ্যাম্ভীভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে কারারুদ্ধ করা হয়।
জেলে তাকে অকথ্য বর্বরচিত অত্যাচার করা হয়
তার দু'হাতের কব্জীর শিরা কেটে দেওয়া হয়। এবং

আমেরিকা ইওরোপসহ বিশ্বের সমস্ত দেশকে
তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হ'লেও। না রাষ্ট্রসঙ্গও এগিয়ে আসেনি

এ নারকিয় অত্যাচার', এ অসংবিধানিক অশান্ত পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করার জন্য।
বিশ্বের কোনো সভ্য দেশ উন্নত দেশ এগিয়ে আসেনি বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত।



১৭ জানুয়ারী ১৯৬১ প্রধানমন্ত্রীসহ আরো দু'জন সহকারী মন্ত্রীকেগাছে বেঁধে
গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।
বিশ্ববাসীর কাছে তার দেহ তার নাম মুছে ফেলবার জন্য

প্রথমে দেহগুলিকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয় তারপর


ঘন সালফিউরিক অ্যাসিড ঢেলে দেহের মন্ড বানানো হয়

হাড়গুলো যেন সহজেই মাটিতে
মিশে যেতে পারে।
২০ জানুয়ারী ১৯৬১ আমেরিকার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডি
তার অভিষেক অনুষ্ঠানে ঘোষনা করেন -বন্দী প্রধানমন্ত্রীকে মুক্ত করা হবে।
বিশ্ববাসী জানে না এর তিনদিন পূর্বেই নরখাদক পিশাচেরা সব শেষ করে দিয়েছে।

এখন প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ সেই দেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়
স্বাধীনতার প্রাক্কালে প্রচার করা হয় নিহত প্রধান মন্ত্রীর বানী
'সবার জন্য সমান অধীকার। এই সংগ্রামী দেশের কোনো সচেতন নাগরিক

ভুলবেনা কোনোদিন সে যুদ্ধকে, যে যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছিলাম'
এক জলন্ত আদর্শের উদাহরণের যুদ্ধ।
যে যুদ্ধের জন্য কেউ কষ্ট কিংবা ক্লেশের কথা বলেনি

যে যুদ্ধে আমরা আমাদের শক্তি দিয়েছি রক্ত দিয়েছি
সে সংগ্রামের সে চোখের জলের সে আগুনের সে রক্তের জন্য আমরা গর্বিত
কারণ সেটা ছিল এক মহৎ সংগ্রাম।

দাসত্বের অবমাননার এক অপরিহার্য্যের শেষ আছে
যা বলপূর্বক আমাদের ওপর আরোপকরা হয়েছিল'
এখন সে দেশে নিহত প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যে ভূমিষ্ট হয়েছিল

পিতার মৃত্যুর ছয় মাস পর, ভোট পায় ১০ শতাংশ।
এখন সে প্রধানমন্ত্রীর মর্মর মূর্তি আছে, তার নামে ডাক টিকিট আছে তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় আছে

বিশ্বের প্রায় সব দেশে।
সে দেশের নাম কঙ্গো আর সেই মহান ব্যক্তিত্ব প্যাট্রিস এমেরী লুমুম্বা!

Wednesday, April 19, 2017
Topic(s) of this poem: history
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Madhabi Banerjee

Madhabi Banerjee

allahabad
Close
Error Success