সুরমা-ফজলী Poem by Madhabi Banerjee

সুরমা-ফজলী

সুরমা-ফজলী
ছেলেবেলায় অনেক আনন্দের মধ্যে
গ্রীষ্মকালে এক বিশেষ আনন্দ বহন করে আনত সুরমা-ফজলী।
না আমাদের তল্লাটে কিংবা নিকটবর্তী দুরত্বেও কোনো রকমের আমবাগান ছিল না।
এ আম আনা হত সেই অনেকদুরের মালদা থেকে।
এ নামটির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় আমাদের মাসীমা
আমাদের খেলার সাথী শনুর মা।
একটা ব্যাপারে আমরা সবাই হার মেনে নিতাম
এবং এক বাক্যে স্বীকার করে নিতাম যে শনুর মা অনেক বেশী স্মার্ট।
এখানে একটি চাটনি কারখানা আছে যেখানে জ্যাম জেলী আচার তৈরী হয়
সেখানে মাসীমা কাজ করে আর সেখানে নাকি বোনাস দিতে হবে বলে আনন্দোলনও করে।
আর সবচাইতে অবাক কথা
যেসব ট্রাকে করে জ্যাম জেলীর জন্য ফল আনা হত,
সেইসব ট্রাকগুলোকে মাসীমা যেখানে হাত দেখাত সেখানে থামত।
আর লড়ীর ওপর থেকে খালাসী আম জাম লিচু কমলা ছুড়ে দিত মাসিমাকে।
এ সময় আমরা সবাই মাসীমাকে ঘিরে থাকতাম।
মাসীমা আমাদের মধ্যে ভাগ করে দিত ফলগুলোকে।
এমনই এক আমের সীজনে
ট্রাক থামিয়ে মাসীমা বড় বড় ফজলী আম নিচ্ছে
আর আমরা সবাই ঘাড় উঁচু করে বিষ্ময়ে তাকিয়ে আছি।
ঠিক এসময়ে শনুর প্যান্টটা অসহযোগিতা করল
দড়ি ছিঁড়ে প্যান্ট মাটিতে পড়ে গেল
তখন ওর অবস্থা তো করুন
একহাতে প্যান্ট সামলাচ্ছে আর একহাত উঁচু করে বলছে
‘আমাকে একটা দাও কাকু'।
অবাক লাগে-চাটনি কারখানায় কাজ করে সংসার চালায় মাসীমা
লড়ি থেকে সুরমা-ফজলী আম গুলো নিয়ে সহজেই
নিজের ছেলেমেয়েদের জন্য ঘরে নিতে পারত মাসীমা।
কিন্তু মাসীমা সে সুরমা-ফজলী কেটে ওর ছেলেমেয়েদের সাথে
আমাদেরও সমানভাগে ভাগ করে দিত।
এখন এই পরিনত বয়সে - এক সুখী এক সফল মানুষ আমি।
ছেলেবেলার সেই স্মৃতি মনে আনন্দ দেয়।
কারণ আনন্দের পরিধী এত বড় এত মিষ্টি
ঠিক যেন সেই বড় বড় সুরমা ফজলী মতো
এক হাতে ধরা যায় না, দু'হাত বাড়িয়ে বুকে জড়িয়ে ধরতে হয়'
আর সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়

Friday, April 21, 2017
Topic(s) of this poem: childhood
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Madhabi Banerjee

Madhabi Banerjee

allahabad
Close
Error Success