●
.
জীবনের যে সময়টাতে প্রবেশের পর
মানুষ নিজেদের ব্যাপারে নয় বরং অন্যদের নিয়ে
মন্তব্য করতে পছন্দ করে, আমিও জীবনের ওই সময়টাতে
প্রবেশের কিছুদিন পর, মধ্যরাতে
ফোনটা বেজে উঠলো। ওটা বাজতে থাকলো আর বাজতেই থাকলো
যেন বিশ্বজগতের শুধু আমাকেই প্রয়োজন,
বাস্তবে যদিও এর বিপরীতটাই।
আমি শুয়ে থাকলাম বিছানায়, চেষ্টা করতে থাকলাম ফোন বাজার
কারণটা বিশ্লেষণ করতে। এটা ছিলো
আমার মায়ের জেদ আর বাবার
যন্ত্রণাদায়ক বিব্রতকর অবস্থা।
যখন ফোন উঠালাম, দেখলাম লাইনটা বিকল।
কিংবা ফোন কি সচলই ছিলো আর ফোনকারীই ছিলো মৃত?
না-কি ফোনটা বাজেই নি, বরং হয়তো দরোজার আওয়াজ ছিলো সেটা?
.
২.
আমার মা ও বাবা ঠাণ্ডার মধ্যে বসে আছেন
সামনের সিঁড়িগুলোর উপর। মা আমার দিকে তাকালেন,
এক কন্যা, অনুবর্তী এক মহিলা,
কখনও আমাদের কথা ভাবো না তুমি, তিনি বললেন।
আমরা তোমার বইগুলো পড়ি যখন ওগুলো স্বর্গে পৌঁছে যায়।
আমাদের উল্লেখ খুব সামান্যই, তোমার বোনের কথা নাই বললেই চলে।
এবং তারা আমার বোনের দিকে ইশারা করে, সম্পূর্ণ এক আগন্তুক,
আমার মায়ের বাহুদ্বয়ে শক্তভাবে জড়ানো।
কিন্তু আমাদের কাছে, তিনি বললেন, তুমি অস্তিত্বশীল থাকবে না।
এবং তোমার বোন— তোমার বোনের আত্মা আছে তোমাতে।
এসবের পর, মরমন মিশোনারিদের মতো তারা অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
.
৩.
তখন রাজপথটা আবারও শাদা হয়ে গিয়েছিলো,
সবগুলো ঝোপঝাড় ভারি বরফে ঢাকা
আর গাছপালা ঝলমল করছিলো, বরফাবদ্ধ।
রাত শেষ হবার অপেক্ষায়, অন্ধকারে শুয়ে ছিলাম আমি।
মনে হচ্ছিলো আমার দেখা রাতগুলোর মধ্যে এটাই দীর্ঘতম,
যে-রাতে আমি জন্মেছিলাম সেটার চে'ও দীর্ঘ।
সব সময় আমি তোমার কথাই লিখি, উচ্চস্বরে বললাম।
যতবার বলি ‘আমি', এটা তোমাকেই বুঝায়।
.
৪.
বাইরে রাজপথটা ছিলো নীরব।
জটপাকানো ঢাকনা-বস্ত্রের নিচে যথাস্থানে পড়ে ছিলো রিসিভার,
তার বিরক্তিকর কম্পন থেমে গিয়েছিলো কয়েক ঘন্টা আগে।
ওটা যেমন ছিলো তেমনই ফেলে রেখেছিলাম;
দীর্ঘ পেঁচানো তার ঝুলে পড়েছিলো আসবাবপত্রের নিচে অব্দি।
তুষারপাত দেখছিলাম,
বেশি অস্পষ্ট জিনিস ছিলো না সেটা
যেহেতুযতটা বড় তার চে'ও বড় মনে হচ্ছিলো সেগুলোকে।
রাত্রির মধ্যভাগে কে ফোন করবে?
ঝামেলা ফোন করছে, হতাশা ফোন করছে।
আনন্দ শিশুর মতো ঘুমাচ্ছে।
.
.
* লুইজ ক্লুখ [২২ এপ্রিল ১৯৪৩ - ]:
২০২০ সালে কবিতার জন্য নোবেলজয়ী মার্কিন কবি।
.
●
#বাঙলায়ন: #রহমানহেনরী; #Bengalized by #RahmanHenry
.
.
#LouiseGlückPoems
** জার্মান ভাষায় এ কবির নাম: লুইজ এলিসাবেথ গ্লিক
রাত্রির মধ্যভাগে কে ফোন করবে? ঝামেলা ফোন করছে, হতাশা ফোন করছে। আনন্দ শিশুর মতো ঘুমাচ্ছে।///// সুন্দর সরলানুবাদ অনুবাদ সব কিছুই বেজে উঠে এ অন্তরে; এ হৃদয়ের গভীরে যখন থাকি নিগূঢ় ধ্যানে; আর এ বেজে উঠা ধ্বনিকেই ভিনদেশি, বিদেশী অচেনা নিয়তি