দগ্ধিভূত ঘরের মধ্যে সকালের নাস্তা খাচ্ছি।
বুঝতেই পারছো: এখানে কোনও ঘর নেই, সকালের নাস্তা নেই,
তবু আমি এখানেই আছি।
চামচ গলে আটকে আছে যে গামলাটার সাথে
সেটাও গলে গেছে।
কেউ নাই চারপাশে।
কোথায় চলে গেছে তারা, ভাই ও বোন,
মা ও বাবা? সম্ভবত, সমুদ্রতীর ছেড়ে
অন্যত্র, তাদের পোশাকগুলো এখনও আলনায়
রান্নাঘরের সিঙ্কে তাদের খাবারের থালাগুলো
চা-ছাঁকনি আর কেতলির পাশে
কাঠের স্টোভের নিকটেই জমে আছে,
প্রতিটি দৃশ্য পরিস্কার ও বিস্তারিত হয়ে আছে
টিনের কাপ আর হাস্যোজ্জ্বল আয়না।
দিনটা ঝলমলে এবং সঙ্গীতহীন,
হ্রদটা নীল, বনভূমি দর্শনীয়।
পুবদিকে মেঘের জমাট এক স্তূপ
কালো রুটিরে মত স্ফীত হয়ে উঠে আসছে ক্রমশ।
ওয়েলক্লথের মধ্যে কুঁচকানো ঢেউ দেখতে পাচ্ছি,
কাচের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি অসংখ্য চিড়ধরা দাগ,
ওইসব অগ্নিতরঙ্গ, যেকানে রোদ এসে আছড়ে পড়তো,
নিজের বাহুদ্বয় ও পদযুগল দেখতে পাচ্ছি না
কিংবা নিজেকে এখানে পড়ে তাকতে দেখে
জানতেও পারছি না এটা কোনও ফাঁদ নাকি আশীর্বাদ, যেখানে
এই বাড়ির সব কিছু শেষ হয়ে গেছে,
কেতলি ও আয়না, চামচ ও গামলা,
আমার নিজেরই শরীরসহ,
আগে যে শরীরটা ছিলো সেটা,
এখন যেটা আছে সেটাও,
সকালের এই টেবিলে বসে আছি, নিঃসঙ্গ ও সুখি,
রুটিবেলনার বোর্ডের ওপর শিশুর নগ্ন পা
(প্রায় দেখতে পাচ্ছি আমি)
আমার জ্বলন্ত পোশাকের মধ্যে, পাতলা সবুজ হাফপ্যান্ট
মলিন হলুদ টি-শার্ট
ধরে আছে কয়লা হয়ে যাওয়া কেক, অস্তিত্বহীন,
দ্যুতিছড়ানো মাংসমজ্জা, ভাস্বর।
- - - - - - - - - -
বাঙলায়ন: রহমান হেনরী
@Bengalized by Rahman Henry